ইন্দাস জলচুক্তি বাতিল: পাকিস্তান জলহীন, ভারতের কড়া বার্তা

ইন্দাস নদী ও ভারত পাকিস্তান জলচুক্তি

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক সব সময়ই স্পর্শকাতর ও কূটনৈতিক উত্তেজনায় পূর্ণ। এবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে বহু পুরনো ইন্দাস জলচুক্তি। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, “ইন্দাস চুক্তি কখনোই পুনরায় চালু হবে না এবং পাকিস্তানকে জলছাড়া থাকতে হবে।” এই মন্তব্য নতুন করে দুই দেশের সম্পর্ককে উত্তপ্ত করে তুলেছে।

ইন্দাস জলচুক্তি: ইতিহাস ও গুরুত্ব

১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী ভারত পূর্বাঞ্চলের নদীগুলি (বিয়াস, রবি ও শতদ্রু) ব্যবহার করতে পারে, আর পাকিস্তান পশ্চিমাঞ্চলের নদী (ইন্দাস, ঝিলম ও চেনাব) ব্যবহার করে। এতে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি জলবন্টন নীতিতে ভারসাম্য আসে।

পহেলগাঁও হামলার পর সিদ্ধান্ত বদল

২০২৫ সালে কাশ্মীরের পহেলগাঁও অঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে ভারত সরকার চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। অমিত শাহ জানান, “যে জল পাকিস্তানে প্রবাহিত হচ্ছিল, তা এবার রাজস্থানে ব্যবহার করা হবে একটি ক্যানাল নির্মাণ করে।”

অমিত শাহের বক্তব্য হুবহু

“We will use the water that rightfully belongs to India… Pakistan will be starved of water it has been getting unjustifiably.”

পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া

এই সিদ্ধান্তের পর পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে ৪টি চিঠি পাঠানো হয় ভারতের কাছে, যাতে তারা চুক্তি পুনরায় কার্যকর করে। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে পরিষ্কার জানানো হয়েছে, দেশের স্বার্থে জল পাকিস্তানে না পাঠিয়ে অভ্যন্তরীণভাবে ব্যবহার করাই এখন অগ্রাধিকার।

কেন গুরুত্বপূর্ণ ভারতের এই সিদ্ধান্ত?

  • রাজস্থানের মরু এলাকায় জলচাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে
  • পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে ভারতের জল ব্যবহার করে
  • সন্ত্রাসবাদে মদত প্রদান বন্ধ হয়নি পাকিস্তানে
  • ভারতের কৃষি ও জনসংখ্যা নির্ভরতা এই জলেই

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে?

এই জলচুক্তি একাধিকবার আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হয়েছে। তবে এবার এর বাতিল হওয়া কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ভবিষ্যতে এই নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

উপসংহার

ইন্দাস জলচুক্তি বাতিলের মাধ্যমে ভারত তার সার্বভৌম অধিকার প্রয়োগ করলো। তবে এই সিদ্ধান্ত দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। জল নিয়ে যুদ্ধ নয়, আলোচনার মাধ্যমে সমাধানই এখন সময়ের দাবি — কিন্তু ভারত তার অবস্থানে অনড়, এবং সেটা নিঃসন্দেহে শক্তিশালী বার্তা বহন করে।

লিখেছেন: Tushar Sarkar | তথ্যসূত্র: News18, ANI, Inshorts

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *